ধর্ষণের মামলায় মামুনুলের বিরুদ্ধে যুবলীগ নেতাসহ ৩ জনের সাক্ষ্য

হেফাজতে ইসলামের সাবেক যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক
ছবি: সংগৃহীত

হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের সাবেক যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকের বিরুদ্ধে কথিত স্ত্রীর দায়ের করা ধর্ষণের মামলায় আরও তিনজনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। নারায়ণগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক নাজমুল হকের আদালতে আজ মঙ্গলবার এ সাক্ষ্য দেন তাঁরা।

সোনারগাঁ উপজেলা যুবলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম, আলোচিত রয়্যাল রিসোর্টের কর্মকর্তা মাহাবুবুর রহমান ও রিসোর্টটির নিরাপত্তা প্রহরী ইসমাইল হোসেন এ সাক্ষ্য দেন। এর আগে গত ২৪ নভেম্বর আদালতে সাক্ষ্য দেন জান্নাত আরা। আজ সাক্ষ্য গ্রহণের সময় আদালতে মামুনুল হক উপস্থিত ছিলেন।

রফিকুল ইসলাম আদালতে বলেন, এক নারীকে নিয়ে মামুনুল হকের রির্সোটে অবস্থান করার খবর পেয়ে সেখানে যান তিনি। পরে ফটকের সামনে সাংবাদিক ও পুলিশ আসে। মামুনুলের কক্ষের দরজায় ধাক্কা দেওয়ার পর তিনি দরজা খুলে দেন। এরপর তাঁর কাছে জানতে চাইলে তিনি ওই নারীর নাম ও পরিচয় সম্পর্কে যা বলেছেন, তার সঙ্গে নারীর কথার মিল ছিল না। এ কারণে উপস্থিত সবার সন্দেহ হয়। পরে পুলিশ মামুনুল হকের সঙ্গে কথা বলেন। ওই সময় মামুনুল হকের লোকজন এসে তাঁকে ও ওই নারীকে নিয়ে চলে যান।

মাহবুবুর রহমান বলেন, মামুনুল হক এক নারীসহ ৫০১ নম্বর রুমে ওঠেন। বিকেলের দিকে স্থানীয় লোকজনসহ আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীরা ভেতরে ঢোকেন। ওই সময় পুলিশ ও সাংবাদিক ছিল। এরপর শোনেন যাঁকে তিনি স্ত্রী পরিচয়ে এনেছেন, তিনি তাঁর স্ত্রী নন। পরে লোকজন এসে রির্সোট ভাঙচুর করেন।

ইসমাইল হোসেন বলেন, এক নারীকে নিয়ে মামুনুল হক তিনটার দিকে রিসোর্টে আসেন। পাঁচটার দিকে অন্য লোকজন ভেতরে যান। পরে পুলিশ ও সাংবাদিকেরা আসেন। সন্ধ্যার দিকে লোকজন এসে রির্সোট ভাঙচুর করে মামুনুল হক ও ওই নারীকে নিয়ে যান।

মামুনুল হকের আইনজীবী ওমর ফারুক বলেন, মামুনুল হককে ফাঁসাতে সাক্ষীরা মিথ্যা তথ্য তুলে ধরে আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন। যুবলীগ নেতা রফিকুল ইসলাম ঘটনার সময় মামুনুল হককে লাঞ্ছিত করার চেষ্টা করেছেন। তিনিও সাক্ষী দিয়েছেন।

এর আগে সকাল নয়টার দিকে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে নারায়ণগঞ্জে আনা হয় মামুনুল হককে। সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে দুপুরে তাঁকে আবার কাশিমপুর কারাগারে নেওয়া হয়।

গত ৩ এপ্রিল সোনারগাঁয়ে রয়্যাল রিসোর্টের একটি কক্ষে কথিত স্ত্রীসহ হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হককে অবরুদ্ধ করেন ছাত্রলীগ-যুবলীগের স্থানীয় নেতা–কর্মীরা। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার সময় হেফাজতের নেতা–কর্মী ও মাদ্রাসার ছাত্ররা রিসোর্টে হামলা চালিয়ে তাঁদের ছিনিয়ে নেন।

১৮ এপ্রিল মামুনুল হককে মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসা থেকে ঢাকা মহানগর পুলিশ গ্রেপ্তার করে। রয়্যাল রিসোর্ট–কাণ্ডের ২৭ দিন পর ৩০ এপ্রিল সোনারগাঁ থানায় হাজির হয়ে ওই নারী মামুনুল হকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেন।