উত্তরার বাড়ির দখল কেন মা-ভাইকে দেওয়া হবে না, তুরিন আফরোজকে আদালত

তুরিন আফরোজ
ফাইল ছবি

রাজধানীর উত্তরায় পাঁচতলা বাড়ির দখল কেন শামসুন্নাহার বেগম ও তাঁর ছেলে শাহনেওয়াজ আহমেদকে দেওয়া হবে না, সে বিষয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের (আইসিটি) সাবেক প্রসিকিউটর তুরিন আফরোজকে কারণ দর্শাতে বলেছেন আদালত। ঢাকার পঞ্চম যুগ্ম জেলা জজ জি এম নজমুছ শাহাদাৎ গতকাল সোমবার এই আদেশ দেন। শামসুন্নাহারের আইনজীবী মনজুর রাব্বি আজ মঙ্গলবার প্রথম আলোকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

শামসুন্নাহার বেগম তুরিন আফরোজের মা আর শাহনেওয়াজ তাঁর একমাত্র ভাই। মামলার কাগজপত্রের তথ্য বলছে, পাঁচ বছর আগে (২০১৭ সালের ১১ মে) তুরিন আফরোজ তাঁর মা ও ভাইকে বিবাদী করে ঢাকার দেওয়ানি আদালতে মামলা করেন।

মামলার আরজিতে তিনি দাবি করেন, উত্তরার সম্পত্তির মালিক তিনি নিজে, তিনি দখলে রয়েছেন। তাঁর ভাই শাহনেওয়াজ ও শামসুন্নাহার ওই সম্পত্তির মালিক নন। বরং বাড়ির দখল নেওয়ার জন্য তাঁরা বেআইনি পদক্ষেপ নেন। পরের বছর (২০১৮ সাল) বাদীপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে উত্তরার সম্পত্তিতে স্থিতাবস্থা দেন আদালত। অবশ্য তুরিনের দাবিতে আপত্তি তুলে ২০১৮ সালের ৫ এপ্রিল লিখিত জবাব দেন শামসুন্নাহার ও শাহনেওয়াজ।

শামসুন্নাহারের আইনজীবী মনজুর রাব্বি প্রথম আলোকে বলেন, উত্তরার বাড়িতে স্থিতাবস্থার আদেশ বাতিল এবং বাড়ির দখলের নির্দেশনা চেয়ে শামসুন্নাহারের মায়ের পক্ষে আবেদন করা হয়। আদালত শুনানি নিয়ে আদেশে দিয়েছেন। আদালতের আদেশে বলা হয়েছে, উত্তরায় বাড়ির স্থিতাবস্থার আদেশ কেন বাতিল হবে না এবং কেন বাড়ির দখল শামসুন্নাহার ও তাঁর ছেলে শাহনেওয়াজকে দেওয়া হবে না, সে বিষয়ে ১০ দিনের মধ্যে তুরিন আফরোজকে কারণ দর্শাতে বলেছেন আদালত।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে তুরিন আফরোজের আইনজীবী মোহাম্মদ সাইফুল করিম মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, তুরিন আফরোজকে কারণ দর্শানোর আদেশ দেওয়া হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আদালতে জবাব দেওয়া হবে।

মামলার আরজিতে তুরিন আফরোজ দাবি করেছেন, তুরিনের মা শামসুন্নাহার ১৯৯১ সালে ক্রয়সূত্রে উত্তরার সম্পত্তির মালিক হন। পরের বছর ১৯৯২ সালে শামসুন্নাহার তাঁর স্বামী তসলিম উদ্দিনকে পাওয়ার অব অ্যাটর্নি নিযুক্ত করেন। পরে ১৯৯৪ সালের ১০ সেপ্টেম্বর তসলিম উদ্দিন মেয়ে তুরিন আফরোজকে হেবা (দানপত্র) করেন। তবে শামসুন্নাহার ও তাঁর ছেলে শাহনেওয়াজ আদালতে লিখিত জবাব দিয়ে বলেছেন, তসলিম উদ্দিন কখনো তাঁর মেয়ে তুরিন আফরোজকে উত্তরার সম্পত্তি দান করেননি।

বরং শামসুন্নাহার তাঁর ছেলে শাহনেওয়াজকে উত্তরার সম্পত্তি ১৯৯৭ সালে হেবা করেন। পরে তিনি ঋণ নিয়ে বাড়ি তৈরি করেন এবং ভোগ দখলে ছিলেন।